যৌক্তিক সময়ে মূল্যস্ফীতি কমবে: অর্থ উপদেষ্টা
বুধবার সচিবালয়ে মূল্যস্ফীতি ও খাদ্য সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে অনুষ্ঠিত এক পর্যালোচনা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন উপদেষ্টা।
যৌক্তিক সময়ের মধ্যে মূল্যস্ফীতি কমবে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেছেন, “মূল্যস্ফীতি রাতারাতি কমবে না, এর জন্য কিছুটা সময় লাগবে। কালকে বাজারে যাবেন, দাম কমবে, সেটা বলব না। যৌক্তিক সময়ের মধ্যে মূল্যস্ফীতি কমবে।”
বুধবার সচিবালয়ে মূল্যস্ফীতি ও খাদ্য সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে অনুষ্ঠিত এক পর্যালোচনা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা।
‘মূল্যস্ফীতি কমাতে সরবরাহ ব্যবস্থা ঠিক করা হবে; উৎপাদন বাড়ান হবে’ জানিয়ে সালেহউদ্দিন বলেন, “মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এটি ঘোড়ার লাগাম টানার মতো নয়। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যৌক্তিক সময় লাগবে।”
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করা হবে বলে জানান তিনি।
মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতির মধ্যে সমন্বয়ের আশ্বাস দিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “আমরা অবশ্যই নতুন পদক্ষেপ নেব। আমরা দেখব পলিসির ইফেক্টিভনেস যাতে বাস্তবায়ন হয়। আমরা যতটুকু খেতে পারব ততটুকুই নেব প্লেটে এবং ডাইজেস্ট করব।”
দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি এখন ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ দশমিক ১০ শতাংশে উঠেছে। মূল্যস্ফীতির এই চিত্র সাড়ে ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর গঠন করা হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। যার নেতৃত্বে রয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শেখ হাসিনার সরকারের সময় থেকেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়া নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ ছিল। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এ অসন্তোষের খবরও প্রকাশ হয়।
এমন বাস্তবতায় বাজারে পণ্যের দাম কমার বিষয়ে আশ্বাস দিলেন নতুন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা।
অর্থ অপচয় রোধের বিষয়ে সচিব বলেন, “সবকিছুই উন্মুক্ত থাকবে; কিছুই গোপন করা হবে না, আগে যেটা করা হতো। তবে অর্থের অপচয় রোধ করতে হবে। পাশাপাশি অর্থের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।”
বৈঠকে উপস্থিত সবাইকে ভয়ভীতিমুক্ত হয়ে কথা বলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “তোয়াজ করার দরকার নেই। এমনকি উপদেষ্টা ভালো মানুষ—এসব কথাও বলার দরকার নেই।”
এসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, “আগামী ৫-৬ মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতি গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে নেমে আসবে। রিজার্ভ সংকট রাতারাতি যাবে না, এর হিসাব করতে হবে। আমদানিতে কোথায় কতটুকু ডলার দেওয়া যায়, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গেও আলাপ করা হবে “
বৈঠকে আরও অন্যদের মধ্যে অর্থসচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার, বাণিজ্যসচিব সেলিম উদ্দিন, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা, খাদ্যসচিব ইসমাইল হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই ডেপুটি গভর্নর হাবিবুর রহমান ও নুরুন নাহার উপস্থিত ছিলেন।
কমেন্ট