বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ী সমাজ ভীষণভাবে উদ্বিগ্ন: ডিসিসিআই

বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ী সমাজ ভীষণভাবে উদ্বিগ্ন: ডিসিসিআই

বুধবার রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই কার্যালয়ে ‘ব্যবসা-বাণিজ্য সহজীকরণে উন্নত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখার অত্যাবশ্যকীয়তা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের ব্যবসায়ী সমাজ ভীষণভাবে উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীদের সংগঠন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ।

তিনি বলেছেন, “আইনশৃঙ্খলা ঠিক না থাকলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না। দেশের পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে ব্যবসায়ীরা ভীষণভাবে উদ্বিগ্ন।”

ব্যবসা ও বিনিয়োগ সহায়ক অনুকুল পরিবেশ তৈরি, চাঁদাবাজি বন্ধসহ অন্তবর্তী সরকারের কাছে বিভিন্ন দাবি জানিয়েছেন তাসকীন আহমেদ।

বুধবার রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই কার্যালয়ে ‘ব্যবসা-বাণিজ্য সহজীকরণে উন্নত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখার অত্যাবশ্যকীয়তা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এতে বিভিন্ন ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা অংশ নেন।

অন্তবর্তীকালিন সরকারের উদ্দেশ্যে ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন বলেন, “আপনারা দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ চাচ্ছেন অথচ বিদ্যুত দিতে পারছেন না। আইনশৃঙ্খলা পরিবেশ ঠিক নেই। সুদহার বাড়তে-বাড়তে কোথায় গিয়ে ঠেকেছে। এরকম অবস্থা চলতে থাকলে বিনিয়োগ আসবে না “

তিনি বলেন, “ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশ তৈরিতে আইনশৃঙ্খলার উন্নয়ন ও অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ আজ দ্রুত পরিবর্তনশীল একটি অর্থনীতির পথে যাত্রা শুরু করেছে। শিল্পায়ন, ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশন, রপ্তানি বহুমুখীকরণ এবং অভ্যন্তরীণ বাজার সম্প্রসারণের মতো নীতিগত উদ্যোগ আমরা নিতে শুরু করেছি।

“কিন্তু এই গতিশীলতার স্বার্থে সবচেয়ে বড় ভিত্তি একটি নিরাপদ, স্থিতিশীল এবং কার্যকর আইন-শৃঙ্খলা পরিবেশ। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, বর্তমানে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনায় উদ্যোক্তাদের সামনে নানাবিধ চ্যালেঞ্জ রয়েছে। অনিরাপদ পরিবেশ, চাঁদাবাজি, প্রতারণামূলক অনলাইন কার্যক্রম, পণ্য পরিবহন ঝুঁকি, জালিয়াতি ও সাইবার হুমকি, যা শুধু বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিতই করছে না; বরং স্থায়ীভাবে অনেক উদ্যোক্তার আস্থা হারিয়ে ফেলছে।”

“এ অবস্থায় ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে একটি সুস্পষ্ট ও যৌক্তিক প্রত্যাশা তারা যেন নির্বিঘ্নে, স্বচ্ছভাবে ও নিরাপত্তার সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন।”

তাসকীন আহমেদ বলেন, “যে ব্যবসায়ী তার কারখানা বা দোকানে দিনশেষে নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত থাকেন, যার পণ্য পরিবহন পথে ছিনতাইয়ের শঙ্কা থাকে, যে ই-কমার্স উদ্যোক্তা প্রতারকের বিরুদ্ধে কোনো দ্রুত প্রতিকার পান না তারা কখনোই বড় পরিসরে বা দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগে উৎসাহী হবেন না।”

“এ মুহূর্তে আমাদের প্রাধান্য পাওয়া উচিত এমন একটি সমন্বিত নীতিমালার ও অ্যাকশনের যেখানে ব্যবসা-সংক্রান্ত আইনশৃঙ্খলা বিষয়গুলো হবে বিশেষভাবে সেনসিটিভ ও সহায়ক। ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের টেকসই অগ্রগতির জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নগর প্রশাসনের সঙ্গে ব্যবসায়ী সমাজের পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে তোলা অত্যন্ত প্রয়োজন।

“একটি নিরাপদ পরিবেশ ছাড়া বিনিয়োগে আস্থা সঞ্চার হয় না। আমরা একটি বিনিয়োগ সহায়ক পরিবেশ দেখতে চায়। যেখানে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনা দ্বিধায় সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, ভবিষ্যতের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতে পারেন এবং নির্ভারভাবে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণে আত্মবিশ্বাসী হতে পারেন। আইনশৃঙ্খলা পরিবেশ স্থিতিশীল না থাকলে দেশের ঋণমানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।”

মতবিনিময় সভায় বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, “ব্যবসা সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোর নিরাপত্তা জোরদারে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কার্যকর বিস্তার, ই-কমার্স ও সাইবার অপরাধ দমন ও প্রতিরোধে বিশেষায়িত ইউনিটের সক্ষমতা ও সমন্বয় বৃদ্ধি, চাঁদাবাজি ও প্রতারণার মতো অপরাধের দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য একটি কার্যকর ফাস্ট-ট্র্যাক অভিযোগ নিষ্পত্তি ব্যবস্থা গঠন করতে হবে।”

“রাতে পণ্য পরিবহনকে নিরাপদ করতে করিডোরভিত্তিক মোবাইল টিম সক্রিয়করণ এবং বিশেষ করে এসএমই খাত ও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য নিরাপত্তা ও সহায়তার পৃথক ও শক্তিশালী ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। ব্যবসায়ীরা যেন নিরাপদ পরিবেশে ব্যবসা পরিচালনা করতে সক্ষম হয় সে ব্যবস্থা করতে হবে, বলেন তাসকীন আহমেদ।

১০ মাসে এডিপি বাস্তবায়ন মাত্র ৪১ শতাংশ, ইতিহাসের সবচেয়ে কম পরবর্তী

১০ মাসে এডিপি বাস্তবায়ন মাত্র ৪১ শতাংশ, ইতিহাসের সবচেয়ে কম

কমেন্ট